Blog
আহা সব পরিবার গুলোই যদি এমন হত।
- September 29, 2018
- Posted by: Towhid Siddiki
- Category: Blog Women Empowerment
জায়েদঃ না তুমি অ্যাপলাই করবা না।
রেবেকাঃ ইস্কুলের চাকরি,সরকারী, মা বলসে করতে(জায়েদের মা)।
জায়েদঃ না তুমি করবা না।
মাঃ কিরে কি নিয়ে এত জোড়ে কথা হচ্ছে ।
জায়েদঃ মা তুমি বলছ – অরে অ্যাপলাই করতে ।
মাঃ হ্যাঁ বলছি-ত-ও। এত লেখাপড়া করসে, এখন কি ঘরে বসে থাকবে নাকি।
জায়েদঃ ঘরে বসে থাকবে কেন? জারিফার বয়স মাত্র ২ মাস ওর দিকে খেয়াল কে রাখবে?
মাঃ জারিফা কে নিয়ে তোমার চিন্তা লাগবে না, আমি একলাই পারব ওকে সামলাতে ।আর এইটা তো ইস্কুলের চাকরি, খালি এক বেলা তাও নিজ এলাকায় , এইটা করলে কি সমস্যা । ওর হাত খরচ ও হল, আর বাসায় বসে থেকে বোরিং ও হল না ।
জায়েদঃ কি বল মা, আমি ওর হাত খরচ চালাই না ।
মাঃ কথা এইখানে টাকার না। কথা টা হচ্ছে এত লেখাপড়া করে যদি ঘরেই বসে থাকে তাহলে কারই কোন লাভ হবে না বরং ওর ব্রেইন টাও অলস হয়ে পড়বে ।এখনো আমরা বেচে আছি তোমরা তোমাদের ভবিষ্যৎ করে নাও।
জায়েদঃ না মা, ও অ্যাপলাই করবে না ।
মাঃ দেখ, ও যদি চাকরি করে তাহলে এতদিন যে লেখাপড়া করছে তার একটা পূর্ণতা পাবে । দেশে আরো দুইটা হাত যোগ হবে কাজের। আর পরিপূর্ণ পর্দার সাথে মেয়েদের চাকরিতে ইসলামও কোন বাধা দেয় নি । আর ও গার্লস ইস্কুলে চাকরি করবে সবার জন্যই ভাল হবে । আর জারিফাকে নিয়ে একদমই চিন্তা করিস না ও যতটুকু সময় ইস্কুলে থাকবে তখন জারিফা আমার কাছেই থাকবে ।
জায়েদঃ মা তুমি সবসময় ওর পক্ষেই কথা বল।
মাঃ জায়েদ বাবা, শোন সবারই উচিৎ আমাদের মেয়েদের পক্ষে কথা বলা কারন তুমি তোমার ফ্যামিলি ছেড়ে আসো নাই বরং ও আসছে ওর পরিচিত পরিবেশ, আপনজন সবাইকে ছেড়ে আমাদের সাথে থাকতে নতুন জীবন করতে। আবার জারিফাকে পৃথিবীতে আনার যে মাত্ত্রিতের কষ্ট ওই সহ্য করেছে । এখন আমরা যদি ওকে সাপোর্ট না করি তাহলে ও কিভাবে নিজেকে বিকশিত করবে। আশাকরি আল্লাহ ওকে যেখানেই নিবে সেখানেই ওর সহকর্মীরা ওকে সহজোগিতা করবে। আমাদের সমাজের সবাই যদি আমাদের মেয়েদের কাজে উৎসাহ দেয় তাহলে চিন্তা কর দেশ কতদুর এগিয়ে যাবে ।
জায়েদঃ মা দুনিয়া এত সহজ না।
মাঃ জানি তো সহজ না, চল আমরা আমাদের নিজেদের ঘর থেকেই শুরু করি ওদের জন্য দুনিয়াকে সহজ করা ।
জায়েদঃ মা আমার কাছে টাকা নাই, আমি এইকাজে কোন টাকা দিতে পারব না ।
মাঃ বাবা তোমার টাকার জন্য আমরা কেউ বসে নাই । ওর সব টাকাই আমি দিব। এই তামজিদ …কোথায় গেলি (তামজিদ, জায়েদের ছোট ভাই)
তামজিদঃ জি মা।
মাঃ এই শোন তোর ভাবির অ্যাপলাই করার ব্যাপারটা দেখিস তো আর যা খরচ লাগে তা আমার থেকে নিয়ে নিস।
রেবেকাঃ না, মা লাগবে না , আমার কাছে আছে, তামজিদ, ভাই আপনি আমার কাছ থেকে টাকা নিয়েন।
বাবাঃ কি হচ্ছে কি এসব, এই পরিবারে আমি এখনও বেঁচে আছি, ও অ্যাপলাই করবে আর সব খরচ আমিই দিব এই তামজিদ শোন শুধু তো অ্যাপলাই করলেই হবে না ভাল একটা প্রিপারেশনও দরকার, বাজার থকে কয়েকটা ভাল প্রিপারেশন এর বইও নিয়ে আসিস। আমাদের বউমা অ্যাপলাই করবে এবং চাকরিও করবে, ইন শা আল্লাহ।
জায়েদঃ থাকও তোমরা একসাথে, আমি আর নাই তোমাদের সাথে।
মাঃ জাও বাবা। আপাতত জাও, খাওয়ার সময় চলে আইস তাইলেই হবে। আর এই ব্যাপারটা নিয়ে তুমি আর চিন্তা কইরো না। পারলে দোয়া কইরো।
…………………………………।।
আহা সব পরিবার গুলোই যদি এমন হত। যেখানে ছেলের বউ এর জন্যও আলাদা ভাবে চিন্তা করা হয়। তার ক্যারিয়ার নিয়েও শ্বশুর শ্বাশুরির এই রকম চিন্তা থাকে এবং তাকে এগিয়ে দিতে তারা সবসময় সচেষ্ট হয়।